স্কলারশিপ পরিচিতি: কমনওয়েলথ স্কলারশিপ
মার্কিন যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে সম্মানজনক একটি স্কলারশিপ হলো কমনওয়েলথ
স্কলারশিপ। মূলত বিশ্বের ৫৬টি কমনওয়েলথের আওতাভুক্ত দেশ থেকে প্রতি বছর দেড় হাজার শিক্ষার্থী
স্নাতকোত্তর করার জন্য এই স্কলারশিপ পেয়ে থাকেন। এই স্কলারশিপের যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৩
সাল থেকে, যার অর্থায়নের রয়েছে যুক্তরাজ্যের 'Department of International
Development'। এর লক্ষ্য হলো সেসব প্রতিভাবান ব্যক্তিদের উন্নয়নে সহায়তা করা, যাদের
নিজ দেশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে। কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমনওয়েলথ দেশগুলির
নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত যারা তাদের স্নাতক অধ্যয়ন শেষ করেছেন এবং যুক্তরাজ্যে স্নাতকোত্তর
ডিগ্রি অর্জন করতে চান। স্কলারশিপ কোর্সের সময়কালের জন্য টিউশন ফি, ভ্রমণ খরচ এবং
জীবনযাত্রার খরচ কভার করে। বৃত্তির মধ্যে গবেষণা ব্যয়ের জন্য একটি ভাতা এবং কোর্স
শেষ হওয়ার পরে শিক্ষার্থীদের দেশে ফেরার বিমান ভাড়া অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
যেহেতু প্রতিবছর খুব কম সংখ্যক শিক্ষার্থী এই স্কলারশিপ পেয়ে থাকেন,
তাই বুঝতেই পারছেন এখানে কেমন প্রতিযোগিতা হয়! এটি মেরিট বেজড স্কলারশিপ, তাই কেবল
সেরাদের সেরা শিক্ষার্থীরাই নিজেদেরকে কমনওয়েলথ স্কলার বলতে পারেন। এখানে রয়েছে অসংখ্য
বিষয় যেমন ইঞ্জিনিয়ারিং, ন্যাচারাল সায়েন্স, হিউম্যানিটিজ, সোশ্যাল সায়েন্স, মেডিসিনসহ
ইত্যাদি বিষয়ে পড়ার সুযোগ। স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামের মেয়াদ এক বছর। সাধারণত প্রতি বছরের
আগস্ট থেকে অক্টোবরের দিকে আবেদন লিংক দেওয়া হয় এবং আবেদন প্রক্রিয়া ডিসেম্বর থেকে
জানুয়ারির মধ্যে শেষ হয়ে যায়।
সুযোগ-সুবিধা:
●
এই স্কলারশিপের মধ্যে শিক্ষার্থীদের টিউশন
ফি, যাতায়াত খরচ, আবাসন ব্যবস্থা, রিসার্চ ফি, যাওয়া-আসার বিমান ভাড়া অন্তর্ভূক্ত।
এতসব সুবিধার কারণ হলো শিক্ষার্থীরা যেন কোনোরকম আর্থিক চিন্তা ছাড়াই তাদের পড়াশোনা
ও গবেষণায় মনোনিবেশ করতে পারেন।
●
এগুলো ছাড়াও কমনওয়েলথ কমিশন কর্তৃক আয়োজিত
যেকোনো প্রশিক্ষণ, স্বল্পমেয়াদি কোর্স, ওয়েলকাম ইভেন্ট ও আঞ্চলিক সম্মেলন যোগদানের
জন্য ট্রেনের টিকিট, থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
●
কমনওয়েলথ স্কলারশিপ শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্যে
অধ্যয়নের সুযোগ দেয়, যা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় একাডেমিক এবং গবেষণা কেন্দ্রগুলোর
মধ্যে একটি। এই নতুন পরিবেশ তাদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত করতে পারে এবং তাদের একাডেমিক
এবং পেশাদার বিকাশকে উন্নত করে।
●
পড়াশোনা শেষে বিশ্বের সেরা প্রতিষ্ঠানে
কাজ করার সুযোগ।
আবেদনের যোগ্যতা:
●
আবেদনকারীকে অবশ্যই কমনওয়েলথভুক্ত দেশের
নাগরিক হতে হবে।
●
স্নাতক সম্পন্ন করতে হবে।
●
স্নাতকে ন্যূনতম সিজিপিএ ৩.০০ থাকতে হবে।
●
নেতৃত্বদানের ক্ষমতা থাকতে হবে।
●
নিজের আর্থিক প্রয়োজনীয়তার কারণ দেখাতে হবে৷
●
একাডেমিক ফলাফল ভালো হতে হবে।
●
একটি গবেষণা পরিকল্পনা থাকতে হবে।
●
দ্বিতীয় মাস্টার্স করতে চাইলে, কেন দ্বিতীয়
মাস্টার্স করতে চাচ্ছেন তার কারণ দর্শাতে হবে।
●
যুক্তরাজ্যে কেউ শিক্ষারত অবস্থায় এই
স্কলারশিপের জন্য বিবেচিত হবেন না।
●
আইইএলটিএস বা টোফেল পরীক্ষা দিতে হবে।
তবে কত পেলে আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে তা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপর নির্ভর করে। সাধারণত আইইএলটিএস
এ ন্যূনতম ৬.৫ ও টোফেলে ন্যূনতম ৯০-কে সর্বনিম্ন স্কোর ধরা হয়।
●
নির্দিষ্ট বয়সসীমা না থাকলেও ন্যূনতম
১৮ বছর বয়সী হতে হবে।
●
স্কলারশিপ প্রোগ্রাম শেষে নিজ দেশে ফিরে
যাওয়ার তাগিদ থাকতে হবে। কারণ এই স্কলারশিপ দেওয়ার মূল কারণই হলে নিজ দেশের চেঞ্জমেকার
হওয়া।
আবেদনের সময় যা যা মাথায় রাখতে হবে:
●
স্কলারশিপ প্রোগ্রামটির আগাগোড়া সব নিয়ে ভালো ধারণা
রাখতে হবে
●
কোর্স ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের সময়
নিজের আগ্রহকে প্রাধান্য দিতে হবে।
●
সব কাগজপত্র একসাথে গুছিয়ে রাখতে হবে।
●
একটি শক্তিশালী ও গোছানো রিসার্চ প্রপোজাল
প্রস্তুত করতে হবে। যাতে প্রপোজাল পড়লেই আপনার সেই বিষয়ের দক্ষতা আন্দাজ করা যায়।
●
একাডেমিক ও সহ-শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত
থেকে ভালো করতে হবে। সেটা হতে পারে রিসার্চ প্রজেক্টে কাজ করা, ভলান্টিয়ারিং, ইন্টার্নশিপ,
পার্ট-টাইম বা ফুলটাইম কাজের অভিজ্ঞতা।
●
ইন্টারভিউ এর জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে
হবে। কারণ এই সিলেকশন প্রসেসের একটি ধাপ হলো ইন্টারভিউ।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
●
পাসপোর্টের কপি।
●
এক কপি পাসপোর্টে সাইজের ছবি৷
●
একাডেমিক সব সার্টিফিকেট ও মার্কশিটের
সত্যায়িত কপি।
●
২-৩টি রেফারেন্স লেটার।
●
জীবনবৃত্তান্ত।
●
রিসার্চ প্রপোজাল।
●
আইইএলটিএস বা টোফেল স্কোরের সনদ।
আবেদনের প্রক্রিয়া:
বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে আবেদনের যোগ্যতা দেখে নিতে হবে। এরপর কোর্স
ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করতে হবে। আগ্রহী প্রার্থীরা এখানে ক্লিক করে স্কলারশিপসংক্রান্ত বিস্তারিত সব তথ্য জানতে পারবেন। আবেদন
করতে প্রথমে ইউজিসির ওয়েবসাইট থেকে আবেদনের নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে প্রয়োজনীয় নথিপত্র
সহ নিম্নলিখিত ঠিকানায় হার্ডকপি জমা দিতে হবে৷
হার্ডকপি জমা দেওয়ার ঠিকানা:
সচিব, উচ্চশিক্ষা কমিশন, আগারগাঁও প্রশাসনিক ভবন এলাকা, শেরেবাংলা
নগর, ঢাকা-১২০৭।
POST A COMMENT
OTHER POSTS OF পরিচিতি CATEGORY
Copyright © 2023
By Bangla Puzzle Limited
To comment in this Blog, SignIn with Google