একসাথে দুইটি চাকরির অফার, কোনটি নিবেন
BY
Nadim Majid
চাকরিপ্রত্যাশী অনেকেই মাঝেমাঝে বিড়ম্বনায় পড়েন। চাকরি হয় না, হয় না করে হঠাৎ করেই অনেকের একাধিক চাকরি হয়ে যায়। এ ধরনের পরিস্থিতিতে আপনার করণীয় নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন নাদিম মজিদ
রাকিব সাহেব পড়েছেন মধুর সমস্যায়। একসাথে চাকরি হয়েছে দুইটি। তাও দুটোই সরকারি। একটি নিজের উপজেলায়। আরেকটি ঢাকায় এক সরকারি অফিসে। বিভিন্নজনের সাথে পরামর্শ করে যোগ দিয়েছেন নিজের উপজেলার চাকরিতে। কারণ, এখানে চাকরি করলে বাবা-মায়ের সাথে থাকতে পারবেন। বাড়ির জায়গা-জমিও দেখাশোনা করতে পারবেন।
এ ধরনের বিড়ম্বনায় শুধু রাকিব সাহেব নয়। অনেকেই পড়েন। তখন কথা উঠে, যার হয়তো, সব জায়গাতেই হয়। এ ধরনের পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নিতে নিচের কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে পারেন।
প্রথমত, ক্যারিয়ার। অনেকসময় আপনার এমন একটি চাকরি হল, যে পদে শুরুতে যোগদান করেছেন, আজীবন সে পদেই থাকা লাগবে। যখন অবসরে যাবেন, সে পদে থেকেই অবসরে যেতে হবে। যেমন, লাইব্রেরিয়ান পদ। কোনো প্রতিষ্ঠানে এ পদে যোগদান করলে সেখান থেকে প্রমোশন পেয়ে সে প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদে যাওয়ার সাধারণত সুযোগ নেই।তাই, একসাথে দুইটি চাকরি হলে বা এক চাকরিতে যোগদানের পরে দ্বিতীয় চাকরির সুযোগ পেলে এ বিষয় বিবেচনা করতে পারেন।
দ্বিতীয়ত, পরিবার। অনেকসময় আপনার এমন একটি চাকরি হল সে চাকরি করলে পরিবারকে সাথে রেখে মানসম্পন্ন জীবন-যাপন করা কঠিন। আপনার বাড়ি মেহেরপুরে। বাবা-মা, ভাই-বোন সবাই সেখানে থাকে। তাদেরকে ঢাকা শহরে নিয়ে এসে বসবাস করতে গেলে বাসা ভাড়ার পেছনে যে খরচ হবে, অন্যান্য আনুষঙ্গিক যে খরচ হবে, আপনার চাকরির বেতন দিয়ে তা কুলানোর সুযোগ নাও হতে পারে। সমমর্যাাদার দুইটি চাকরির সুযোগ পেলে এ বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে পারেন।
তৃতীয়ত, খরচ। আপনি এমন একটি চাকরিতে যোগদান করলেন, সে চাকরিতে আপনি যা বেতন পান, তা দিয়ে নিজের খরচ মেটানো কষ্টসাধ্য। সে ক্ষেত্রে খরচের বিষয়টিও মাথায় রাখা উচিত। কারণ, বর্তমানে হয়ত আপনি পরিবারের পেছনে বিনিয়োগ করতে হচ্ছে না, কিন্তু ভবিষ্যতে করা লাগবে। আপনি বাড়িতে থেকে চাকরি করলে আপনার বাসা ভাড়া দেয়া লাগবে না। খাবারের অনেক খরচ হয়ত বাড়িতে থাকার কারণে লাগবে না। যা মাসশেষে আপনার সেভিংসে জমা হবে। সে টাকা দিয়ে আরেকটু বেশি চিন্তা করতে পারবেন।
চতুর্থত, বাড়তি আয়। এমন অনেকেই আছে যারা চাকরির পাশাপাশি অন্যকিছু করেন। যেমন, কারো কারো বাজারে দোকান আছে। সন্ধ্যায় সেখানে সময় দেন। কেউ কেউ ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং করেন। এতে তার আয় শুধু চাকরিতেই সীমাবদ্ধ থাকছে না, পাশাপাশি অন্যান্য উৎস থেকে আয় জমা হচ্ছে।
পঞ্চমত, প্যাশন। কাজের প্রতি ভাল লাগা। আমার পরিচিত এমন একজনকে দেখেছি, সে একটি টিভি চ্যানেলে সাংবাদিক হিসেবে কাজ করছে। আয় বেশি নয়। অন্য চ্যানেলে গেলে তার বেতন বাড়বে। কিন্তু ভাল লাগার জন্য সে চাকরি সে ছাড়ছে না। অনেকক্ষেত্রে প্যাশনও সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে।
ষষ্ঠত, চাকরির মেয়াদকাল। কিছু কিছু চাকরির বেতন ভাল, কিন্তু সে চাকরি প্রজেক্টভিত্তিক বা চুক্তিভিত্তিক। এক বছর পরে বা দুই বছর পরে সে প্রজেক্ট বন্ধ হয়ে যাবে। এ ধরনের চাকরির স্থায়ীত্ব নেই দেখে বেশিরভাগ-ই করতে চায় না।
পরিশেষে, বলতে চাই, আপনার সময়, সুযোগ, সুবিধা এবং ক্যারিয়ার এসব বিবেচনা করে ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিবেন। কারণ, এ ধরনের সুযোগ যেমন বারবার আসে না। আবার, সুযোগ আসলেও একবার হাতছাড়া হয়ে গেলে আর সে সুযোগ পাবেন না।
POST A COMMENT
OTHER POSTS OF পরামর্শ CATEGORY
Copyright © 2023
By Bangla Puzzle Limited
To comment in this Blog, SignIn with Google