Home পরামর্শ

দিনে সাতটি কাজ কার্যকরভাবে করার উপায়

দিনে সাতটি কাজ কার্যকরভাবে করার উপায়

10 Min read

Friday, February 2nd 2024



এক দিনে সাতটি বিষয় পড়া বা সম্পন্ন করা ভীষণ চ্যালেঞ্জের? না কি সম্ভব। কীভাবে? দেখে নিতে পারেন দিনে সাতটি সাবজেক্ট পড়ালেখার উপায়গুলো।

 

চারটি উপায়ে বা চারটি গুরুত্বপূর্ণ দিক আমলে নিয়ে আপনি একদিনেই সাতটি বিষয় অধ্যয়ন করতে পারবেন। এর মধ্যে প্রথমে রয়েছে

 

প্রাধান্য বা অগ্রাধিকার দেওয়া ও পরিকল্পনা

প্রথমে নিজের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অথবা কঠিন বিষয়টি বেছে নিতে হবে। আপনার বেলায় কোন বিষয়টিতে সবচেয়ে বেশি মনযোগ দিতে হয়? এটা বোঝা ও নির্ধারণ করা জরুরি। এটা হতে পারে কোনো বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্ট, পরবর্তী পরীক্ষা অথবা অন্য কোনো টাস্ক যা আপনার জন্য জরুরি।

ধরে নিচ্ছি, বুঝতে পেরেছেন আপনার কোন বিষয়টি দিয়ে শুরু করা উচিত। পড়ালেখা শুরু করার আগে প্রাধান্য অনুযায়ী তালিকা তৈরি করতে হবে। অর্থাৎ কোনটি আগে, কোনটি পরে পড়বেন, তা বোঝার চেস্টা করুন। এরপর আপনার কাছে কোনটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ বেছে নিন।

এবার ওই বিষয়ের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পড়ালেখার সময়কে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিন। এরপর তাড়াহুড়ো না করে সঠিক সিডিউল বা সময়সূচি নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য টাইম প্ল্যানার অ্যাপ, ক্যালেন্ডার বা অন্য কোনো টুল ব্যবহার করতে পারেন।

মনে রাখতে হবে, অনাকাঙ্খিত কোনো ঘটনার কারণে পড়ালেখায় ছেদ ঘটতে পারে। ফলে চাপ পড়বে সময়সূচিতে। তাই নমনীয় হতে হবে এবং ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে, যাতে পরিকল্পনামাফিক স্টাডি সম্পন্ন করা যায়। প্রথমে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হলে সহজে সামনের দিকে আগাতে পারবেন।

 

 

ভেঙ্গে ফেলুন

মনে রাখুন, আপনি একবিংশ শতাব্দীর শিক্ষার্থী। অথচ অনেক শিক্ষার্থী অষ্টাদশ শতাব্দীর ধ্যানধারণা নিয়ে পড়ালেখা করেন। এ কারণে দেখা যায়, তারা সবসময় কঠিনতম পথে স্টাডি করছেন। তাদের বোঝা উচিত, পড়ালেখার জন্য চৌকস পদ্ধতি বেছে নিতে হবে। নতুনত্বকে মেনে নিতে হবে। বুঝতে পারছেন, কিছু স্মার্ট অভ্যাস ও কৌশল মেনে চলতে হবে। তাহলে পড়ালেখায় যেমন গতি আসবে, তেমনি সহজে মনেও রাখতে পারবেন।

তাই পুরনো পদ্ধতির বদলে পড়ালেখাকে মাইক্রোকসমিক স্তরে নিয়ে আসতে হবে। এজন্য ‘এসকিউ৫আর’ মেথড বা পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। এখানে S দিয়ে ‘সার্ভে’, Q দিয়ে ‘কোয়েশ্চন’, 5R দিয়ে ‘রিড’, ‘রিসাইট’, ‘রিফ্রেজ’, ‘রিভিউ’ ও ‘রিফ্লেক্ট’ বোঝানো হয়েছে। এই পদ্ধতি অনুসরণ করার অন্যতম উপকার হচ্ছে, আপনি সহজে মস্তিস্কের ‘ওয়ার্ম আপ’ করতে পারবেন। ফলে গভীর মনযোগ দিয়ে পড়ালেখা করতে পারবেন। সহজে ফ্যাক্ট ও কনসেপ্ট চিহ্নিত করার পাশাপাশি বুঝতে পারবেন তথ্যগুলো কীভাবে একে অপরের সঙ্গে জড়িত। একই সঙ্গে স্মৃতিতে ধরে রাখতে পারবেন তথ্যগুলো।

এখন আপনার পড়ালেখার সেশনগুলোকে কয়েকটি খণ্ডে বা অংশে ভাগ করুন, যা সহজে পরিচালনা করতে পারবেন। প্রত্যেক বিষয়ের জন্য প্রধান কনসেপ্ট বা ধারণাগুলো কি তার ওপর নজর দিন। নোট রাখুন। চ্যাপ্টারগুলোর মধ্যে কোনটি আসন্ন পরীক্ষা বা অ্যাসাইনমেন্টের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তা বোঝার চেষ্টা করুন। এবার সব বিষয়ের জন্য আলাদা কাজের তালিকা তৈরি করুন।

 

কার্যকর শেখা

দিনে সাতটি বিষয় সম্পন্ন করতে চাইলে কার্যকর শিখনপদ্ধতি অনুসরণ করুন। যেমন, সংক্ষিপ্তকরণ। সমস্যার সমাধান অথবা অন্য কাউকে শেখানো। অর্থাৎ আপনি শিক্ষকের ভূমিকায় অভিনয় করে কাউকে নির্দিষ্ট বিষয় শেখাতে পারেন। এর মধ্য দিয়ে আপনি অধিক কার্যকর উপায়ে অনেক তথ্য জানতে পারবেন এবং সময় বাঁচাতে সক্ষম হবেন। এছাড়া কনটেন্টের পড়া, লেখা, আলোচনা, সমস্যা সমাধান, মূল্যায়ন করা ইত্যাদি কার্যকর শেখার মধ্যে পড়ে।

এজন্য মনে করতে হবে, আপনি কোনো শ্রেণিকক্ষে রয়েছেন। একই সময় আপনি শিক্ষক ও ছাত্রের ভূমিকায়। এবার প্রশ্ন করুন এবং উত্তর দিন। আরেক ধাপে আপনার কাছে সবচেয়ে কঠিন বিষয়টি নিয়ে এক মিনিটের কোনো পেপার উপস্থাপন করুন। এরপর ব্রেইনস্টর্মিং শুরু করুন। ব্রেইনস্টর্মিং বলতে সিদ্ধান্তসভাও বোঝানো হয়ে তাকে। তাই কোনো সহপাঠী কাউকে সঙ্গে রাখতে পারেন। না হলে নিজেই দ্বৈত ভূমিকায় থাকুন। এজন্য বোর্ড ব্যবহার করুন। এবার নির্দিষ্ট টপিক বা প্রশ্ন করুন। নিজেই বোর্ডে উত্তর লিখুন। অথবা নানা রঙের ফ্লাশকার্ড ব্যবহার করতে পারেন। সেগুলোয় সংক্ষেপে তথ্য লিখে রাখতে পারেন। কল্পিত সহপাঠিতে তা বোঝানোর চেষ্টা করুন। ছোট-বড় যেকোনো শ্রেণিতেই ব্রেইনস্টর্মিং থিওরি সমানভাবে প্রযোজ্য, হোক সেটা যেকোনো ডিসিপ্লিন বা সময়ের। তাই নিজের আইডিয়া জেনারেট করে নিজেই সমাধানের চেষ্টা করতে থাকুন।

 

 

স্বল্পবিরতি এবং পর্যালোচনা

কোনো একটি বিষয় সেদিনের জন্য সম্পন্ন হলে বিরতি নিন। এতে রিচার্জ হবে আপনার। মন ফ্রেশ হয়ে উঠবে। মনযোগ বিক্ষিপ্ত হবে না। মস্তিস্ক আরাম পায়, ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। একটানা পড়লে মনযোগ ধরে রাখা কষ্টের হতে পারে। তাই ২৫ থেকে ৩০ মিনিট পরপর ৫-১০ মিনিটের জন্য বিশ্রাম নিতে পারেন। এ সময় পায়চারি করতে পারেন। চোখ বন্ধ করে চুপচাপ থাকতে পারেন। তবে এই বিরতিকালে যে বিষয়টি পড়েছেন তা দ্রুত পর্যালোচনা করার চেষ্টা করতে হবে।

দিন শেষে পুনরায় প্রত্যেকটি বিষয়ের মূল পয়েন্টগুলো ঝালাই করে নিন। ফলে বিষয়গুলো সম্পর্কে আপনার বোঝার ক্ষমতা আরও সমৃদ্ধ হবে। এক বিষয় থেকে আরেক বিষয় শুরু করার মাঝে অবশ্যই বিরতি নেবেন। খাবার খাওয়াসহ পড়ালেখার বাইরে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য দীর্ঘবিরতি প্রয়োজন।

দিন শেষে নিজের সিডিউল পর্যালোচনা করুন এবং আপনার অগ্রগতি মূল্যায়ন করুন। যেসব টাস্ক সেদিন সম্পন্ন করতে পারেননি তার নোট রাখতে হবে। পরের দিনের পরিকল্পনার সঙ্গে মিল রেখে আগের দিনের অসম্পন্ন কাজগুলো সম্পন্ন করার চেষ্টা করুন। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, পূর্ববর্তী দিনের কাজ যেন বেশি না জমে।

 

মনে রাখতে হবে, লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য অবিচল থাকতে হবে। একাগ্রচিত্তে পড়ালেখা করতে হবে। মনযোগ যাতে বিক্ষিপ্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাহলে দিনে সাতটি বিষয় সম্পন্ন করা যাবে।

 




POST A COMMENT

To comment in this Blog, SignIn with Google

OTHER POSTS OF পরামর্শ CATEGORY

কখন থেকে চাকরির প্রস্তুতি শুরু করবেন

10 Min read

Saturday, January 27th 2024

কখন থেকে চাকরির প্রস্তুতি শুরু করবেন

সাক্ষাৎকারের প্রস্তুতি নেয়ার ১১ ধাপ

10 min read

Saturday, January 20th 2024

সাক্ষাৎকারের প্রস্তুতি নেয়ার ১১ ধাপ

ক্যারিয়ার উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করুন

10 Min read

Saturday, January 6th 2024

ক্যারিয়ার উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করুন

শিক্ষার্থীদের জন্য আত্মউন্নয়নমূলক ১০ বই

10 Min read

Friday, December 22nd 2023

শিক্ষার্থীদের জন্য আত্মউন্নয়নমূলক ১০ বই

ওয়ার্ক ফ্রম হোমের প্রয়োজনীয় পাঁচ গ্যাজেট

5 Min read

Saturday, December 16th 2023

ওয়ার্ক ফ্রম হোমের প্রয়োজনীয় পাঁচ গ্যাজেট

কর্মক্ষেত্রে সফট স্কিল বাড়ানোর উপায়

8 min read

Saturday, November 25th 2023

কর্মক্ষেত্রে সফট স্কিল বাড়ানোর উপায়