নেটওয়ার্কিংয়ের সময় কি করবেন, কি করবেন না
BY
Nadim Majid
নেটওয়ার্কিংয়ের সময় কি করবেন, কি করবেন না
কোনো ইভেন্ট কিংবা কনফারেন্সে আমাদের নেটওয়ার্কিং করার সুযোগ আসে। অনেকে এসব সুযোগ বেশ সুন্দরভাবে কাজে লাগায়, অনেকে সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়। নেটওয়ার্কিংয়ের সময় করণীয় এমন উল্লেখযোগ্য কিছু টিপস তুলে ধরছেন নাদিম মজিদ
একটি কনফারেন্সে গেলেন। চা-বিরতি চলছে। হুড়মুড় করে নিজের চা নিয়ে নিজে নিয়ে এসে চা পান করলেন। তারপর ফেসবুকিং করতে লাগলেন। কনফারেন্স শুরু হলে আবার মনোযোগ দিলেন সে বক্তব্যে। আপনার এ ধরনের স্বভাব থেকে থাকলে আপনি নেটওয়ার্কিংয়ের পুরো সুযোগটিই মিস করলেন। বিরতির এ সুযোগ নেটওয়ার্কিংয়ে কাজে লাগাতে পারতেন এবং নিজের ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডের প্রসার ঘটাতে পারতেন।
কোনো প্রোগ্রাম বা ইভেন্টে যাওয়ার আগে গবেষণা করুন: কোনো কনফারেন্স কিংবা নেটওয়ার্কিংয়ের ক্ষেত্রে প্যানেলিস্ট এবং বক্তাদের নিয়ে আগাম গবেষণা করে রাখুন। যেন প্রশ্নোত্তর পর্বে আপনি সুন্দর একটি প্রশ্ন করতে পারেন। প্রশ্ন করার সময় অবশ্যই আপনি আপনার পরিচয় দিয়ে প্রশ্ন করবেন। এতে ইভেন্টে উপস্থিত ব্যক্তিরা আপনার সম্পর্কে জানতে পারবে।
আপনার ব্যক্তিগত ইলেভেটর পিচ পারফেক্ট রাখুন: ইলেভেটর পিচ হল কারো সাথে দেখা হলে আপনি ১ মিনিটের মধ্যে নিজেকে কি পরিচয় দিতে চান। মাথায় রাখুন, এ পরিচয়-ই যেন আপনার পাঠানো ইমেইলের ফুটারে কিংবা লিংকডইনে রিকোয়েস্ট পাঠানোর সময় দেখা যায়।
আপনার কোম্পানি কাজ সম্পর্কে বারবার অনুশীলন করুন: অনেকসময় কোম্পানির জনশক্তিরা তাদের কোম্পানির কাজ সম্পর্কে সঠিক উত্তর দিতে পারে না। এতে কোম্পানির ব্র্যান্ডিং হওয়ার সুযোগ মিস হয়ে যায়। তাই, আপনার কোম্পানি সম্পর্কে অন্যদেরকে বলতে অভ্যস্থ হতে হবে। যেমন: আমি (অমুক) প্রতিষ্ঠানের (অমুক) পদে আছি। আমাদের প্রতিষ্ঠান (অমুক) সেক্টরে (অমুক) সেবা দিয়ে থাকে।
আপনার নেটওয়ার্কিং চেষ্টাকে টার্গেটেড করুন: কোনো ইভেন্টে কারো সাথে পরিচিত হলে নিজের ব্র্যান্ডের সাথে যায়, এমন ব্যক্তিদের সাথে নেটওয়ার্কিংয়ের জন্য বেশি সময় দিন। তার সাথে বিজনেস কার্ড এক্সচেঞ্জ করুন। লিংকডইনে যুক্ত হয়ে নিন।
একটি শক্তিশালী লিংকডইন প্রোফাইল তৈরি করুন: আপনি কোনো প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে নাও থাকতে পারেন, কিন্তু লিংকডইনে আপনার সঠিক তথ্য দিয়ে আপডেট রাখুন। এতে যে কেউ গুগলে আপনার নাম দিয়ে সার্চ করলে যেন আপনাকে সহজে খুঁজে পাবে।
মিটিংয়ে যাওয়ার পূর্বেই প্রশ্ন রেডি রাখনু: একটি নেটওয়ার্কিং মিটিং থেকে কি চান, তা আগে জেনে নিন। মিটিংয়ে ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কিত কোন প্রশ্নের উত্তর খুঁজে থাকলে আপনার নেটওয়ার্কিংয়ে সুবিধা হবে সে প্রশ্ন আগেই রেডি করে নিন।
প্রচুর প্রশ্ন করবেন না: আপনি যে ইভেন্টের প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রশ্ন করছেন, সেখানে প্রয়োজনীয় প্রশ্ন করুন। প্রচুর প্রশ্ন করবেন না। ইভেন্টের ফাঁকে যার সাথে কথা বলছেন, তাকেও প্রচুর প্রশ্ন করবেন না। সে ক্ষেত্রে আধা ঘণ্টার জন্য একটি অনলাইন মিটিং কিংবা তার অফিসের কাছাকাছি শর্ট কফি খাওয়ার জন্য অনুরোধ করতে পারেন।
প্রথম পরিচয়েই ফেভার চাইবেন না: আপনার জন্য একটি ফুল মেন্টরশিপ সেশন কিংবা আপনার রিজিউম রিভিউয়ের প্রয়োজন হলে তার সাথে সরাসরি আলোচনা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। প্রথম পরিচয়েই এ ধরনের ফেভার চাইলে উনি স্বভাবত বিরক্ত হবেন।
প্রত্যেক ইন্টারএকশন কাজ না করলে চিন্তিত হবেন না: কোনো একটি মিটিংয়ে অসংখ্য লোকের সাথে দেখা হতে পারে। তাই বলে প্রত্যেক ইন্টারএকশন পারফেক্ট হবে, এমন কোনো কথা নেই। প্রতিটি অভিজ্ঞতা থেকে শেখার চেষ্টা করুন।
শুধু নতুন কানেকশন তৈরিতে মনোযোগ দিবেন না: আপনার সাথে আগে তৈরি হওয়া নেটওয়ার্কগুলোর সম্পর্কও কার্যকর করুন। আপনার লিংকডইনে ৫০০+ কানেকশন তৈরি হওয়ার চেয়েও আগের কানেকশনগুলো কার্যকর করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
নিজেকে পরিচয় দেয়া অনুশীলন করুন: কাজটি খুবই সহজ। কিন্তু একটি নেটওয়ার্কিং ইভেন্ট অনুসারে আপনার পরিচয় অনুশীলন করুন। ব্যাচের প্রোগ্রামের পরিচয় আর সেলস কনফারেন্সের ইন্ট্রোডিউচিং একই হয় না।
যেমন: ব্যাচের প্রোগ্রামের পরিচয়ের ক্ষেত্রে আপনি বলতে পারেন, আমি তামিম রায়হান এবিসি লিমিটেডে সেলস ডিরেক্টর হিসেবে আছি। ঢাকার আদমজী স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাস করেছি।সেলস কনফারেন্সে আপনার পরিচয় হতে পারে, আমি তামিম রায়হান এবিসি লিমিটেডে সেলস ডিরেক্টর হিসেবে আছি। আমি কনজিউমার ব্র্যান্ডগুলো দেখাশোনা করি।
কারো কাজ সম্পর্কে জানেন, এমন হলে আপনি বলতে পারেন, আমি তামিম রায়হান এবিসি লিমিটেডে সেলস ডিরেক্টর হিসেবে আছি। আমি আপনার অমুক ভিডিও দেখেছি। আমি অমুক বিষয়ে সুন্দর ফুটিয়ে তুলেছেন। আপনার সাথে দেখা হয়ে ভাল লাগল।
নেটওয়াকিং খুব অস্থির বিষয়। কাজে লাগাতে চেষ্টা করুন।
POST A COMMENT
OTHER POSTS OF পরামর্শ CATEGORY
Copyright © 2023
By Bangla Puzzle Limited
To comment in this Blog, SignIn with Google