ফ্রেশারদের সিভি লেখার নিয়ম
BY
Nadim Majid
চাকরির বাজারে নিয়োগ কর্মকর্তাগণ একজন চাকরিপ্রার্থীকে বিচার করার আগে বিচার করেন তার সিভি। সিভি সুন্দর হলে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য থাকলে ইন্টারভিউ বোর্ডে ডাক পড়ে। সদ্য বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েটদের সিভিতে আহামরি দেয়ার মত তথ্য থাকে না। কিন্তু একটু মাথা খাটিয়ে সিভি লিখলে ফ্রেশারগণও ইন্টারভিউ বোর্ডে ডাক পেতে পারেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অভিজ্ঞদের ডিঙিয়ে পেতে পারেন চাকুরিও। দেশ ক্যারিয়ারের এ লেখায় থাকছে ফ্রেশারদের সিভি লেখার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম।
1) চাকরির বিজ্ঞপ্তি পুনরায় পড়ুন
2) আপনার যোগাযোগের তথ্য দিন
3) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যোগ করুন
4) ব্যক্তিগত লক্ষ্য ঘোষণা করুন
5) সফট স্কিল ও হার্ড স্কিলের তালিকা করুন
6) পড়াশোনার তথ্য দিন
7) কাজের অভিজ্ঞতার বিস্তারিত দিন
8) শখ এবং আগ্রহগুলো লিখুন
9) আপনার বিবিধ স্কিল হাইলাইট করুন
10) নতুন দক্ষতার প্রতি আগ্রহের কথা ঘোষণা করুন
11) প্রুফরিডিং এবং সিভি সম্পাদনা করুন
12) অনলাইন থেকে সিভির নমুনা দেখুন
13) সুন্দর ফন্ট ব্যবহার করুন
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করা অথবা সরাসরি চাকরির অভিজ্ঞতা
না নেয়া ব্যক্তিদের সিভি ফ্রেশার সিভি হিসেবে পরিচিত। তাদের সিভি সাদামাটা হয়ে থাকে।
কিন্তু আবেদনকারীর দক্ষতা, শক্তির জায়গা, ছোটখাটো কাজের অভিজ্ঞতা সিভিতে যোগ করলে সে
সিভি নিয়োগদাতাদের চোখে আলাদা হয়ে যায়। তারা চাকরিপ্রার্থীর সে সিভিকে আলাদা করে বিবেচনা
করেন এবং ইন্টারভিউয়ের জন্য ডেকে থাকেন।
কিভাবে একজন একজন ফ্রেশার তার সিভি লিখবেন?
একজন ফ্রেশারের সিভি লেখার জন্য কয়েকটি প্রয়োজনীয় ধাপ তুলে ধরা হল:
চাকরির বিজ্ঞপ্তি পুনরায় পড়ুন: চাকরির বিজ্ঞপ্তিটির
খুঁটিনাটি পড়ুন। চাকরির বর্ণনায় কি কি কিওয়ার্ড এবং কিওয়ার্ডগুচ্ছ লেখা আছে, তার একটি
নোট নিন এবং আপনার সিভির হাইলাইট পয়েন্টে সে সব কিওয়ার্ডকে আপনার দক্ষতা হিসেবে ব্যবহার
করুন। মাথায় রাখবেন, আপনি যে পদে আবেদন করছেন, সে পদের সাথে এসব দক্ষতার যেন মিল থাকে।
আপনার যোগাযোগের তথ্য দিন: সিভির উপরের অংশে যোগাযোগের তথ্য দিন।
সেখানে আপনার নাম, ঠিকানা, ইমেইল এবং ফোন নাম্বার অবশ্যই দিবেন। অনেকে উপরে শুধুমাত্র
নাম দিয়ে থাকে, ভিতরে বাকি তথ্য দেয়। এ কাজ ভুলেও করবেন না।
আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যোগ করুন: পেশাগত যে কোনো সোশাল
মিডিয়া প্রোফাইল আপনার সিভিতে যোগ করুন। এতে নিয়োগদাতাদের অতিরিক্ত তথ্য নেয়ার প্রয়োজন
হলে সেখান থেকে নিতে পারবে। ঠিকানা সেকশেনর নিচেই সোশাল মিডিয়া একাউন্ট যোগ করুন।
ব্যক্তিগত লক্ষ্য ঘোষণা করুন: ব্যক্তিগত তথ্যে আপনি
কে, কেন আপনি এ পেশায় ক্যারিয়ার গড়তে চান, আপনার ক্যারিয়ারের লক্ষ্য এবং আপনার পূর্ববর্তী
সময়ে জেতা কোনো অ্যাওয়ার্ড অথবা স্বীকৃতি এতে যোগ করুন।
আপনার সফট ও হার্ড স্কিলের তালিকা করুন: যে কোনো নিয়োগদাতা
চায়, তার প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের মধ্যে সফট স্কিল এবং হার্ড স্কিল থাকুক। আপনি যে
পদের জন্য আবেদন করছেন, সে পদের সাথে সম্পর্কিত দক্ষতাগুলো সিভিতে যোগ করুন। যেমন:
আপনি গ্রাহক সেবার কোনো পদে আবেদন করলে আপনার যোগাযোগ দক্ষতা, ইন্টার পারসোনাল দক্ষতা
এবং সমস্যা সমাধানে দক্ষতার কথা উল্লেখ করতে পারেন। আপনি যদি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
পদে আবেদন করতে চান, তাহলে আপনার কোডিং দক্ষতা এবং বিভিন্ন প্রোগ্রামিং জ্ঞানের উপর
দক্ষতার কথা উল্লেখ করতে পারেন। লেখালেখি, পরিকল্পনা কিংবা সংগঠিত করার গুণ থাকলে তা
উল্লেখ করতে ভুলবেন না।
পড়াশোনার তথ্য দিন: আপনার একাডেমিক পড়াশোনা, আপনার সার্টিফিকেট
এবং লাইসেন্সের তালিকা দিন। সেখানে অবশ্যই অর্জনের সময়ের তথ্য দিন। আপনি স্কুল, কলেজ
বা বিশ্ববিদ্যালয়ে টপার হলে, অ্যাওয়ার্ড বা বৃত্তি পেয়ে থাকলে তা উল্লেখ করুন।
কাজের অভিজ্ঞতার বিস্তারিত দিন: সিভিতে আপনার পূর্ববর্তী
কাজের অভিজ্ঞতাসমূহ লিখুন। আপনার যদি উল্লেখ করার মত পেশাগত অভিজ্ঞতা না থাকে, তাহলে
অন্যের সাথে কাজ করেছেন এমন কাজের কথা লিখুন। আপনি যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ
বা পার্টটাইম চাকরি করে থাকেন, সে অভিজ্ঞতারও বিস্তারিত দিন।
শখ এবং আগ্রহগুলো লিখুন: আপনার লিখতে ভাল লাগে, ভাল লাগে ফটোগ্রাফি কিংবা গ্রাফিক্স ডিজাইন, এ ধরনের শখের কথাগুলোও লিখুন। লিখুন আপনার আগ্রহের জায়গাও। এ ধরনের তথ্য আপনার নিয়োগপ্রাপ্তির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিবে।
আপনার বিবিধ স্কিল হাইলাইট করুন: কোনো বিদেশি ভাষায়
আপনি ফ্লুয়েন্ট থাকলে উল্লেখ করুন। অনেক প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তির
চাহিদা থাকে। আবেদনকারীর বহু-সাংস্কৃতিক দক্ষতা আলাদা চাহিদা হিসেবে কাজ করে।
নতুন দক্ষতার প্রতি আগ্রহের কথা ঘোষণা করুন: বর্তমানে যে কোনো প্রতিষ্ঠান
পরিচালনা করার জন্য নতুন নতুন দক্ষতার প্রয়োজন হয়। যে কোনো প্রতিষ্ঠান চায়, তাদের কর্মচারীগণ
প্রতিষ্ঠানের জন্য স্বেচ্ছায় নতুন দক্ষতা শিখবে এবং তারা দ্রুত শিখে থাকবে। সিভিতে
এ ধরনের ঘোষণা থাকলে তা সহজে নিয়োগদাতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকে।
প্রুফরিডিং এবং সিভি সম্পাদনা করা: আপনার সিভি তৈরি সম্পন্ন
হলে রিভিউ করুন। বানান ভুল আছে কিনা চেক করে নিন। ভুল থাকলে ঠিক করে নিন। নিজে দুইবার
সিভিটি খুঁটিয়ে পড়ুন। আপনার পরিবারের কোনো সদস্য কিংবা কোনো বন্ধুকে দিয়ে সিভি দেখিয়ে
নিন।
অনলাইন থেকে সিভির নমুনা দেখুন: আপনার ইন্ডাস্ট্রির
অন্যদের সিভি দেখুন, তারপর নিজের সিভির তুলনা করুন। যদি সে সব সিভির কোনো বিষয় আপনার
সিভিকে সমৃদ্ধ করার মত হয়, তাহলে আপনার সিভিতে সে সব পয়েন্ট তুলে ধরুন।
সুন্দর ফন্ট ব্যবহার করুন: সিভিতে সুন্দর ফন্ট এবং রং ব্যবহার না করলে একটি সুন্দর সিভিও বেখাপ্পা হয়ে থাকে। তাই, চোখের দেখায় আরাম লাগে এমন Calibri, Arial, অথবা Helvetica’র মত ফন্ট ব্যবহার করতে পারেন। সিভির ব্যাকগ্রাউন্ডের স্পেস সাদা হলে তা লেখাগুলো সহজে চোখে পড়ে।
ফ্রিতে সিভি তৈরি করার কিছু অনলাইন ঠিকানা:
1. https://www.resume-now.com/resume/templates/google-doc
2. www.canva.com/ /resumes/templates
3. https://zety.com/resume-templates
4. https://www.livecareer.co.uk/cv/free-cv-templates
………………………………..
তরুণদেরকে সাপ্তাহিক ইমেইলের মাধ্যমে ক্যারিয়ারভিত্তিক বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে
আসছে দেশ ক্যারিয়ার। আপনিও contact.deshcareer@gmail.com ঠিকানায় ইমেইল পাঠিয়ে সাবস্ক্রাইবার
হয়ে নিতে পারেন।
POST A COMMENT
OTHER POSTS OF পরামর্শ CATEGORY
Copyright © 2023
By Bangla Puzzle Limited
To comment in this Blog, SignIn with Google