শরীরকে ফিট রাখুন
ফিট থাকতে কে না চায়! অনেকে আবার জানেন না কীভাবে ফিট থাকা যায়। সুস্থ-সবল থাকতে শরীরচর্চার বিকল্প নেই বলেই জানান বিশেষজ্ঞরা। কেউ বাসায় করেন ব্যায়াম, কেউ করেন ইয়োগা আবার কেউবা জিমে গিয়ে করেন শরীরচর্চা। ব্যায়াম ছাড়াও জীবনে আরও কয়েকটি পরিবর্তন আনতে পারলে থাকতে পারেন ফিট। যেমন টিভি কম দেখা, কম্পিউটার বা ভিডিও গেমে কম সময় ব্যয় করা, ধূমপান থেকে বিরত থাকা ইত্যাদি। বরং এগুলোর পরিবর্তে ব্যায়াম করে সময়টিকে কাজে লাগাতে পারেন। বর্তমান সময়ে তরুণ-তরুণীসহ কমবেশি অনেক মানুষের জীবনের অন্যতম প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে জিম। বিশেষজ্ঞরা এর পেছনের কারণ হিসেবে কর্মজীবন ও অন্যান্য ব্যস্ততার ভিড়ে নিজেদের সুস্থ রাখতে ভুলে যাওয়াকে দায়ী করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন কারণে সঠিক সময়ে প্রায়ই খাওয়া সম্ভব হয় না। ফলে অনিয়মের কারণে শরীরের ওজনের তারতম্য ঘটে। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়ে। যেকোনো বয়সের মানুষ শরীরকে ফিট রাখতে সপ্তাহে কমপক্ষে চার দিন হলেও শারীরিক ব্যায়াম করা প্রয়োজন বলে মনে করেন ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ (চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমন্ডি) ডা. এম ইয়াছিন আলী।
পরিমাণমতো ঘুম
ফিট ও সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন। ঘুমের অভাব শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। ঘুমের অভাব মেজাজ, একাগ্রতা, স্মৃতিশক্তি, দক্ষতা, স্ট্রেস হরমোন, ইমিউন সিস্টেম এবং কার্ডিওভাস্কুলার স্বাস্থ্যকেও প্রভাবিত করে। ঘুম শরীরকে সুস্থ রাখতে ও পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে। ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুমে সারা দিন শরীর চালিয়ে নেওয়া যায়। তবে কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পর যদি ক্লান্ত বোধ করেন, তাহলে কিছু সময় ঘুমিয়ে নিন। যাকে বলে ছোট ঘুম দেওয়া। নিয়মিত সঠিক ও পরিমাণমতো ঘুম আপনাকে রাতের পরে জেগে থাকতে ও ফিট থাকতে সাহায্য করবে।
নিয়মিত হাঁটুন
ফিট ও সুস্থ থাকার জন্য ব্যায়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফিট থাকার জন্য প্রতিদিন কয়েক মিনিট হাঁটুন। কার্ডিওভাস্কুলার ব্যায়াম হৃদ্যন্ত্র ও ফুসফুস শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। শক্তি প্রশিক্ষণ পেশি শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। তাই নিয়মিত কিছু সময় হাঁটুন।
অনুভূতি সম্পর্কে বলুন
আবেগকে মনের ভেতরে বন্দী রাখতে মানসিক চাপের পাশাপাশি শারীরিক সমস্যার উপসর্গের কারণ হতে পারে। অব্যক্ত অনুভূতি হতাশা, ঘুমের সমস্যা, খাওয়ার ব্যাধি ও শারীরিক ব্যথারও কারণ হতে পারে। তাই আপনার অনুভূতি সম্পর্কে কথা বলতে বলুন। কিংবা কোনো ধরনের শিল্পের মাধ্যমে সেগুলো প্রকাশ করুন। এমনকি চিন্তাভাবনা বা অনুভূতিগুলো লেখার মাধ্যমেও কঠিন ব্যাপারগুলো প্রকাশ করার একটি ভালো উপায় হিসেবে বেছে নিতে পারেন।
চাপ থেকে দূরে
চাপ বা টেনশন ভালো নয়। কারণ, এটি শরীরের ক্ষতি করে। হৃদ্যন্ত্রের, হজমের সমস্যাসহ অনেক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। ব্যায়াম, ধ্যান, আপনি যা পছন্দ করেন তা করা, আধ্যাত্মিকতা, প্রকৃতিতে থাকা এবং শখ পূরণে উপভোগ্য করার মাধ্যমে শরীরের ওপর থেকে চাপের ক্ষতিকারক প্রভাব দূর করতে পারেন। অতিরিক্ত পরিশ্রম ও বিরতিহীন কাজ থেকে নিজেকে রক্ষা করে চলুন। যারা আপনাকে সমর্থন করে, তাদের সাথে নিজেকে ঘিরে রাখার চেষ্টা করুন।
ধারাবাহিকতা ও সংযম
স্বাস্থ্যকর ও ফিট জীবনধারা বজায় রাখার জন্য সবকিছুর ধারাবাহিকতা থাকা গুরুত্বপূর্ণ। একবারে একটি পরিবর্তন করার চেষ্টা করুন। একসঙ্গে একের অধিক পরিবর্তন করতে চাইবেন না। কারণ, এতে পুরোনো অভ্যাসগুলো পুনরায় প্রবেশ করার ঝুঁকি থাকে। ফিটনেস, ব্যায়াম, খাবারসহ সবকিছুর ক্ষেত্রে ধারাবাহিক ও সংযম থাকার চেষ্টা করুন।
স্বাস্থ্যকর খাবার
সুস্থ ও ফিট থাকার জন্য প্রচুর তাজা ফল, শাকসবজি খান। এ ছাড়া খাদ্যতালিকায় মাছ, মটরশুঁটির মতো প্রোটিনের চর্বিহীন খাদ্যও রাখতে চেষ্টা করুন। পরিমাণমতো সুষম খাবার খেতে চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। বার্গার, পিৎজা, কৃত্রিম মিষ্টির মতো জাঙ্ক ফুডগুলো এড়িয়ে চলুন।
প্রচুর পানি পান করুন
প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। কারণ, এটি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে এবং একটি স্বাস্থ্যকর শরীর বজায় রাখতে সহায়তা করে। এটি হজমতন্ত্রের প্রাকৃতিক ক্লিনজারও। এ ছাড়া পানি ত্বক ও প্রস্রাবের মাধ্যমে বিষাক্ত পদার্থগুলো বের করতেও সহায়তা করে।
খারাপ অভ্যাসকে ছুটি দিন
‘ছেড়ে দিন’ তালিকার অভ্যাসগুলো, যেমন ধূমপান, ড্রাগস, অনিরাপদ যৌনতা এবং অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর আসক্তি থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। কারণ, এগুলোর কোনোটিই স্বাস্থ্যকর হতে পারে না। আবার কিছু অভ্যাস আছে যা খুব বেশি খারাপ নয়, তবে খুব বেশি দূরে নিয়ে গেলে সহজেই সমস্যা হয়ে উঠতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে অ্যালকোহল, চিনি, ক্যাফেইন ও জাঙ্ক ফুড। এই জিনিসগুলো পরিমিতভাবে, মাঝেমধ্যে গ্রহণ করতে চেষ্টা করুন।
POST A COMMENT
OTHER POSTS OF পরামর্শ CATEGORY
Copyright © 2023
By Bangla Puzzle Limited
To comment in this Blog, SignIn with Google